চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম কনটেইনার ডিপোতে আইসিটি দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক আবদুস সোবহানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁরই মেয়ে ফাইযা।বাবার খোঁজে ডিএনএ নমুনা দিতে মায়ের কোলে চড়ে হাসপাতালে এসেছে সাত মাসের ফাইযা রহমান।
গত শনিবার রাতে ডিপোতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান আবদুস সোবহান। স্ত্রী ইস্পাহান সুলতানাকে ভিডিও কল দিয়ে আগুনের ভয়াবহতা দেখাচ্ছিলেন তিনি। স্ত্রী তাঁকে তখন আগুনের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে বলেছিলেন। সাবধান করেছিলেন, যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মিনিট পাঁচেক পরই বিকট শব্দ।
চারপাশে ঝাঁজালো গন্ধ, ডিপো এলাকা যেন ধ্বংসস্তূপ
কনটেইনার ডিপোর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসছেন রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে
মুহূর্তেই অন্ধকার হয়ে যায় মুঠোফোনের পর্দা। এর পর থেকেই খোঁজ নেই আবদুস সোবহানের। আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেটে কথা হয় ইস্পাহানের সঙ্গে। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে ছিলেন তিনি। ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। থেমে থেমে কাঁদছিলেন। আর বলছিলেন, ‘তাঁকে সরে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু সরে নাই।’
পরিবারের সব সদস্য মিলে ডিপো, বিভিন্ন হাসপাতালে তন্নতন্ন করে খুঁজেছেন আবদুস সোবহানকে। কিন্তু পাননি। ইস্পাহানের পাশে বসে ছিলেন আবদুস সোবহানের ভাই রায়হান উদ্দিন। তিনিও নমুনা দেবেন। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রতিটি পরিবারের দুজনের কাছ থেকে নমুনা নেওয়া হবে।
আগুন লাগার ঘটনা শোনার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ইউনিটের দুটি দল। তাঁদের কেউ আগুন নেভাতে কনটেইনারে পানি দিচ্ছিলেন, আবার কেউ সঞ্চালন লাইন ঠিক করছিলেন। এমন সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এতে হতাহত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ অনেকে। এখন পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় ৪৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে।